কেবল সামাজিক যোগাযোগে নয়; বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের পাশাপাশি মানুষের জীবনের নানা স্তরে খুবই শক্তিশালীভাবে নিজের উপস্থিতি জানান দেয় ফেইসবুক।
ফেইসবুকে একদিকে যেমন গড়ে উঠে নানা মানবিক আবেদন; তেমনি এই মাধ্যম মানুষকে হেয় করতে, বিদ্বেষ ছড়াতে, এমনকি গুজব ছড়ানোর কাজেও অনেকে ব্যবহার করেন।
এই ফেইসবুকের মাধ্যমে বিশ্ব কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে, জীবের কল্যাণে বড় ভূমিকা পালন করা সম্ভব। অনেকে এটা করেও যাচ্ছেন।
ফলে প্রায়ই আমরা মানুষের অহেতুক সমালোচনা, সম্মানহানি, বুঝে-না বুঝে মন্তব্য বা ঘৃণা ছড়াতে জনপ্রিয় এই সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে ফেলি।
বাক স্বাধীনতা মানে এই না যে, আমি অন্যকে গালি দেওয়ার অধিকার রাখি। আমার যে যে স্বাধীনতা আছে, সেটা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকেরই আছে, প্রতিটি মানুষের আছে। নিজের স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে পথ চলতে গিয়ে অন্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আমি হাঁটতে পারব না।
পর্দার এ পাশে বসে একটা লেখা দিয়ে দিচ্ছি কিন্তু এটা যে কতগুলো চোখের সামনে যাচ্ছে-তা আমরা ভুলে যাই। তাই হামেশাই আমরা কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিচ্ছি। ফেসবুক একটি আনুষ্ঠানিক সামাজিক প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু যে কথাগুলো ঘরে বা পরিচিত বন্ধুদেরও বলা উচিত না, সেই আলাপগুলোও আমরা ফেইসবুকে সবার সামনে করে ফেলছি।
ফেইসবুকে অনেক বন্ধু থাকে। সবাই যে পরিচিত বন্ধু, তাও কিন্তু নয়। দূর থেকে তারা আমার সম্পর্কে বাজে ধারণাও পোষণ করতে পারেন। হ্যাঁ, ধরলাম আমি পিছু কথায় কান দেই না। তাই বলে নিজের উপস্থাপনটা কি কুৎসিত হওয়া উচিত?
কাউকে কাউকে দেখি, সরাসরি গালি পোস্ট করছে। বড়-ছোট কত রকম বয়সের মানুষ এখানে আছে তা আমরা মাথায় রাখছি না। এভাবে দিন দিন আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে।
গুজব ছড়াতেও এখন মূলত ফেইসবুককে বেছে নেওয়া হয়। শোনা কথা, কাল্পনিক কথা ইত্যাদি ছড়িয়ে দেয়া হয়। উদ্দেশ্য নিয়েও অনেকে গুজব ছড়ান। গুজব মানুষকে উত্তেজিত করে তোলে। তখন একজন মানুষ সঠিক বিচার-বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা হারায়। এরপরের পরিণতি দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না।
রমজান আলী (১৭), যশোর