বেশ কিছু বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির থমাস ক্রোথার ও তার সহকর্মীরা স্যাটেলাইট হতে ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর মোট বৃক্ষের সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন। যেখানে দেখা যায়, মাথাপিছু বৃক্ষের সংখ্যায় কানাডা সবার উপরে। কানাডায় মাথাপিছু বৃক্ষের সংখ্যা আট হাজার ৯৫৩। রাশিয়ায় রয়েছে চার হাজার ৪৬১ টি বৃক্ষ। প্রতিবেশি দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ছাড়া সবার চেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের দেশে মাথাপিছু বৃক্ষের সংখ্যা মাত্র ছয়টি! অথচ প্রতিবেশি ভারত, নেপাল ও ভুটানের মাথাপিছু বৃক্ষের সংখ্যা যথাক্রমে ২৮, ১১৯ এবং দুই হাজার ৪১৮টি।
বিপুল জনসংখ্যা ও স্বল্প আয়তনের এই দেশে মাথাপিছু মাত্র ছয়টি বৃক্ষ, যা বলে দেয় আমরা কতখানি বৃক্ষহীন পরিবেশে বসবাস করছি।
স্থানীয় পরিবেশের প্রধান উপকরণই হল নির্মল বায়ু, পানি ও শস্য সম্পদ। কিন্তু যান্ত্রিক সভ্যতার কারণে কল কারখানা, যানবাহন, শহর-নগর বেড়ে গেছে বহু পরিমাণে। জ্বালানীর ব্যবহার বেড়ে গেছে বহুগুণ। কার্বণ ডাই অক্সাইডসহ নানা বিষাক্ত গ্যাস ও ধূলিকণায় বাতাস দুষিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বৃক্ষ নিধনের ফলে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জীবন ধারণে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক সংকট।
এসব বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা প্রয়োজন। বৃক্ষ পরিবেশ রক্ষায় যেমন সহায়ক, তেমনি আমাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনও মেটায়। ১৫ কোটি মানুষ যদি প্রতিবছর একটি করে বৃক্ষরোপন করে, তাহলে জীব জগতের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে সরকার ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এটাই সময়।
ফাতিন ইশরাক (১৬), রংপুর