বর্ষা রানী বীনা, যখন তার জীবনের দারিদ্র্যতা, হতাশা এবং যৌন হয়রানির যন্ত্রনাময় সংগ্রামের কথা বলছেন, তখন রংপুর মুসলিম কমিউনিটি হল অডিটোরিয়ামে, প্রায় তিন’শ-এর বেশি কিশোর-কিশোরী, অভিভাবক, নাগরিক প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রতিনিধি উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও পিনপত্তন নিরবতা বিরাজ করছিল।যখন তিনি তার সফলতার গল্প শেষ করলেন এটা বলে, তিনি কিভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি একটি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে খন্ডকালীন চাকুরী করছেন এবং কথা দিলেন যে তিনি কখনও মাথা নিচু করবেন না, সবাই তখন সেই নীরবতা ভঙ্গ করে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান।রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বীনার অভূতপূর্ব মনোবলকে অভিনন্দন জানানএবং ঘোষনা করেন যে, তিনি তার শহরের সকল কিশোর-কিশোরীদের সবধরনের সহযোগিতা করবেন বিশেষ করে যারা দুর্দশাগ্রস্ত তাদের। এবং সেই সাথে তিনি স্থানীয় সরকারের বিভাগীয় পরিচালকেরসাথে একত্রিত হয়ে প্রতিশ্রুতি দেন যে, কিশোর কিশোরীদের জন্য শুরু হওয়া কাজগুলোকে তিনি আরো শক্তিশালী করবেন।গত ১০ নভেম্বর আয়োজিত এই অসাধারন মাল্টিসেক্টোরাল ইভেন্টের উদ্দেশ্য ছিল কিশোর কিশোরীদের মধ্যে থাকা সম্ভাবনাকে উদযাপন করা এবং তাদের আরো বেশি উৎসাহ প্রদান করা। রংপুর বিভাগে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত এই আয়োজনের নাম ছিল ‘Celebrating Adolescent Power’। দিনটি শুরু হয় র্যালীরমাধ্যমে। র্যালীতে অংশ নেয়া কিশোর কিশোরী এবং শহরের নাগরিকেরা “বাল্য বিবাহ বন্ধ করুন”, “আমরা কিশোর কিশোরীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা চাই”,”Live with Adolescent Spirit, Not in Despair” লেখা ফেস্টূন বহন করেছিলেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা, মহিলা বিষয়ক ও তথ্য বিভাগের কর্তকর্তারা।এরপরই শুরু হয় কিশোর কিশোরীদের সাথে খোলামেলা আলোচনা, মাল্টিমিডিয়া ক্যাম্পেইন উদ্বোধন এবং মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে, এসবের মধ্যেই বারবার উঠে আসছিল গুনগত সেবা ও যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে কিশোর কিশোরীদের ক্ষমতায়ন এবং নাগরিকদের সাথে একত্রিত হয়ে নেতৃত্বের উদাহরন তৈরী করার কথা।