গত ৩১
জুলাই আনন্দঘন একটি দিন ছিল আমার জন্য। অংশ নিয়েছিলাম ইউনিসেফের “কৈশোরের জয়গান” উদযাপনে।
প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে উৎসব মুখরিত পরিবেশেই কাটালাম দারুণ কিছু মুহূর্ত।
হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমের চারজন শিশু সাংবাদিক ছিল সেখানে। সেই চারজনের মধ্যে একজন ছিলাম আমি। আমাদের
চারজন ছিলাম চারটি বুথের দায়িত্বে। বুথগুলো হলোঃ এন্ডিং চাইল্ড ম্যারেজ (ইসিএম), ইউ-রিপোর্ট, ইচ্ছেডানা এবং স্বর্ণশেফ রাঁধন লড়াই।
আমি ছিলাম এন্ডিং চাইল্ড ম্যারেজ (ইসিএম) বুথের দায়িত্বে।
আমাদের কাজ ছিল এ উদ্যোগগুলো
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের সামনে তুলে ধরা। সবকিছু বুঝে নিতে অনুষ্ঠান শুরু
হওয়ার নির্ধারিত হওয়ার কিছু সময় আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম আমরা। ধীরে ধীরে সেখানে আমার
মতো আরো অনেক কিশোর-কিশোরী হাজির হতে থাকে। তাদের কেউ শিশুশিল্পী, কেউ শিশু সাংবাদিক, কেউ ফুটবলার, কেউ আবার স্বর্ণকিশোরী। এত এত
কিশোর-কিশোরীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে আরো আনন্দময় করে তুলে।
“কৈশোরের জয়গান” উদযাপনে
অংশ নিয়ে আমি অনেক কিছু জেনেছি। ইউনিসেফের ইসিএম, ইউ-রিপোর্ট ইচ্ছেডানা ও স্বর্ণশেফ রাঁধন লড়াই প্রকল্প সম্পর্কে জানতে
পেরেছি। প্রত্যেকটি
উদ্যোগ সম্পর্কে জেনেই আমি
আনন্দিত হয়েছি। বিশেষ করে ইচ্ছেডানা নামের ধারাবাহিক নাটক সম্পর্কে জানতে পেরে খুব
খুশি হই। মেয়েদের একটি ফুটবল টিম ও তাদের বাঁধাগুলো নিয়েই এ নাটক। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ প্রমীলা ফুটবল
দলের বেশ সফল। দেশের হয়ে ফুটবল মাঠে অনেক জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। তবু খেলাধুলা
এদেশের মেয়েদের অংশগ্রহণে অনেক বাধা। আমি মনে করি এ নাটকটি অনেককেই অনুপ্রানিত
করবে।
দেখা হয়েছে আনোয়ার হোসেনের সাথে।
বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেনতা সৃষ্টি করতে লাল সাইকেল নিয়ে লাল জামা পড়ে ৫৬ হাজার
বর্গমাইলের এ দেশ ঘুরে বেড়ান তিনি। নিজের ভাগ্নীর বাল্যবিয়ে আটকাতে পারেননি। তিনি
চান না আর কারো এমন পরিণতি হোক। তাই সবাইকে সচেতন করতে লিফলেট দিয়ে বেড়ান তিনি।
আহ্বান জানান রুখে দাঁড়ানোর। তার এমন অসাধারণ ও ব্যাতিক্রমধর্মী কাজ আমাকে অভিভূত
করে। তার সাথে দেখা হওয়াটাও ছিল দারুণ অভিজ্ঞতা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের
আফরোজ চুমকি ও সচিব নাছিমা বেগম উপস্থিত ছিলেন। উভয়েই তাদের বক্তব্যে আমাদের
অর্থাৎ কিশোর-কিশোরীদের বেশ গুরুত্ব দিলেন। আমাদেরকে দেশের ভবিষ্যত হিসেবে আখ্যা
দিলেন।
মনে প্রশ্ন জাগল, যদি তাই হয় তবে এখনো কেনো এদেশের অজস্র
শিশু তাদের অধিকার হতে বঞ্চিত? আশা করি, একদিন সব শিশুই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ সব অধিকার । কৈশোরের
শক্তিগুলো হারিয়ে যাবে না, বিকশিত হয়ে
এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে।