Opinions Stories About Engagement Reports Join Now
Join U-Report, Your voice matters.
STORY
যৌন হয়রানিতে হোক প্রতিবাদ
প্রতিদিন নিগ্রহ ও যৌন হয়রানির শিকার হয় নারী। আর একে নিয়তি ভেবে প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে বেশির ভাগ নারীই। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে এই নিশ্চুপ হয়রানি। আর এসব ঘটনা অনেকটাই ঘটে গণপরিবহনে।

অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে প্রতিদিন নারী ব্যবহার করছে গণপরিবহন। এতে চালকের সহকারী থেকে শুরু বাসে চলাচল করা যুবক থেকে মধ্যবয়সী সবার কাছে প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে নারী।

সদা হাস্যোজ্জল আমার এক বান্ধবী হঠাৎ মন খারাপ করে ক্লাসে বসে আছে। আমি অনেক মজার কথা বলেও বান্ধবীকে হাসাতে পারলাম না। শেষে জিজ্ঞেস করলাম ওর কী হয়েছে। ও যা বলল তা শুনে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল।

বলল, তোরা ছেলেরা কত স্বাধীন, রাস্তা ঘাটে তোদের একা কোনো সমস্যা নাই। কেউ উত্যক্ত করে না ইচ্ছে করলেই যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় যেতে পারিস। আর বাসে কেউ তোদের শরীরে হাত দেয় না। আজ বাসে পাশের সিটে বসা বাবার বয়সী লোকটা আমার সাথে বাজে আচরণ করেছে।

আমার আর বুঝতে বাকি রইল না ওর সাথে কী হয়েছে? প্রতিদিন বাসে চলাচল ওর। আমি শান্তনা দিয়ে বললাম সব সময় প্রতিবাদ করতে হবে। বরং প্রতিবাদ না করলে এই লোকগুলোর হাত থেকে তোর নিস্তার নেই।

২০১৮ সালে প্রকাশিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক পরিচালিত ‘নারীর জন্য যৌন হয়রানি ও দুর্ঘটনামুক্ত সড়ক’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে দেশে গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় ৯৪ শতাংশ নারী মৌখিক, শারীরিক বা অন্যান্যভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যার ৮১ শতাংশ কোনো প্রতিবাদ না করে চুপ থাকেন আর ৭৯ শতাংশ তাদের জায়গায় পরিবর্তন করেন।

আরেক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড তাদের পরিচালতি জরিপে বলছে,  ৫৩ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা আর ৪২ শতাংশ নারী বাসে যাতায়াত করা পুরুষ যাত্রী দ্বারা ভিন্নভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার।

এই জরিপ আরও বলছে, বাংলাদেশে ভীড়ের মাঝে ৫৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানি এবং ৮৪ শতাংশ নারী অশ্লীল মন্তব্য, ইঙ্গিতের শিকার হন।

গণপরিবহন বা জনসমাগম এলাকায় যৌন হয়রানি, অশ্লীল মন্তব্য, অনৈতিক ইঙ্গিত রোধে আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই বলেই চলে।

বাংলাদেশের সংবিধানে যৌন নিপীড়নের শাস্তি হিসাবে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩৫৪ নং ধারায় বলা হয়েছে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড এবং ৫০৯ ধারা অনুযায়ী এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হতে পারে।

ডিএমপি অধ্যাদেশ, ১৯৭৬  এর ৭৬নং ধারা অনুযায়ী এক বছরের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।

এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের ১০ নং ধারা অনুযায়ী যৌন হয়রানির শাস্তি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বনিম্ন তিন বছরের কারাদণ্ড।

বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে মানুষ বেশি অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠেছে। যখন দেখি ধর্ষণের আসামিও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বের হয়ে যায় তখন যৌন হয়রানির মতো অভিযোগে আসামি কতটুকু শাস্তি পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এজন্য হয়তো এইসব বিষয়ে নারীরা মুখ খুলতে বা প্রতিবাদ করতে চান না।

তাই বলতে পারি অপরাধী উপযুক্ত শাস্তি পেলে একদিকে যেমন অপরাধ কমবে অন্যদিকে নারীরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাবে।


শেখ নাসির উদ্দিন (১৬), টাঙ্গাইল

See by the numbers how we are engaging youth voices for positive social change.
EXPLORE ENGAGEMENT
UNICEF logo